ক্যানাডার অ্যালবার্টায় ফোর্ট ম্যাকমারের দাবানলে শহরটির প্রায় পাঁচ ভাগের একভাগ ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে, ওই এলাকাও পুরো জ্বলেপুড়ে ছারখার হয়ে গেছে।
বিবিসির সাথে আলাপকালে স্থানীয় মন্ত্রী ডেভিড ইয়ুরদিগা বলেছেন শহরটি এমনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেটি আবার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে কয়েক বছর সময় লেগে যেতে পারে।
কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে যে গতিতে আগুন ছড়াচ্ছিল এবং আরও ছড়িয়ে পড়ার যে আশঙ্কা করা হচ্ছিল, সেটি এখন কম। ঠান্ডা আবহাওয়া ও হালকা বৃষ্টির কারণে এখন আস্তে আস্তে জ্বলছে আগুন, খুব বেশি ছড়াচ্ছেনা।
গত ১লা মে দাবানল শুরু হবার শহরের প্রায় এক লাখেরও বেশি বাসিন্দাকে শহর ছেড়ে যেতে হয়েছে।
গত তিন বছর যাবত ফোর্ট ম্যাকমারেতে বসবাস করছেন বাংলাদেশি প্রপা রহমান।
দাবানলের কারণে নিজের ঘরবাড়ি ছেড়ে চলে আসতে বাধ্য হয়েছেন।
জরুরি অবস্থায় প্রথমে ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছিলেন, এখন আছেন ক্যালগ্যারিতে তাঁর পরিবারের সাথে।
বিবিসির সাথে আলাপকালে প্রপা রহমান বলছিলেন যখন তাঁদের সরানো হচ্ছিল তখনও সেভাবে ছড়ায়নি আগুন।
কিন্তু কর্তৃপক্ষের লক্ষ্য ছিল কোনও মানুষের গায়ে যেন একটা আঁচও না লাগে। তাই বাড়িঘরের দিকে আসার আগেই সবাইকে সরিয়ে নেয়ার উদ্যোগ নেয় তারা।
Image copyright AFP
Image caption ফোর্ট ম্যাকমারের প্রায় বিশ শতাংশ ঘরবাড়ি আগুনে পুড়ে গেছে।
মিস রহমান বলছেন শুরুতে তাঁরা কেউই বুঝতে পারেননি আগুন এতটা ভয়াবহ হয়ে উঠবে। কারণ মাঝেমধ্যেই বনে আগুন লাগে কিন্তু সেটা শহরে আসেনা। পরে বুঝতে পেরেছিলেন এটার ভয়াবহতা।
প্রপা রহমান বলছিলেন, “আমার স্বামী তখন প্ল্যান্টে কাজ করছিল। তখন শুনলো যে এক জায়গায় বাড়িঘরের দিকে আগুন চলে আসতেছে। তখন সবাই বাড়ি ছেড়ে যাচ্ছিল। অনেকের গাড়িতে গ্যাস নাই। তারপরও বের হয়ে গেছে”।
“কর্তৃপক্ষের জরুরি ঘোষণাতে চোখের সামনে প্রয়োজনীয় কাগজপাতি যা ছিল আর দুই একটা কাপড় নিয়েই বাড়ি ছেড়ে আসেন। বুঝতে পারছিলামনা কয়দিন বাসার বাইরে থাকতে লাগবে”- জানান প্রপা রহমান।
“সাউথের মানুষদের আশ্রয় দিয়েছে সাউথের কোনও জায়গায় । আর নর্থের মানুষরা নর্থের ক্যাম্পে আশ্রয় নিচ্ছিল। প্রত্যেকটা ক্যাম্পে ১৫-২০ হাজারের মতো মানুষ ছিল”।
তবে যখন ক্যাম্পে সবার জায়গা হচ্ছিলনা আর খাবারও হয়তো শেষ হয়ে যাচ্ছিল তখন সবাইকে বিমানে করে এডমন্টন ও ক্যালগেরিতে পাঠানো হয়েছে এবং কর্তৃপক্ষ নিজ খরচেই এটি করেছে বলে জানান মিস রহমান।
প্রপা রহমান এখন ক্যালগেরিতে তাঁর বাবার বাসায় রয়েছেন।
ফোর্ট ম্যাকমারেতে ৮০টি বাংলাদেশি পরিবার ছিল এবং এরা এডমন্টন বা ক্যালগেরিতেই নিরাপদে আছেন বলে জানান মিস রহমান।
“এডমন্টন ক্যালগেরির বাংলাদেশি কমিউনিটিও অনেক সাহায্য করছে। তারা সবাই বলছে ফোর্ট ম্যাকের কেউ যদি থাকতে চায় তাহলে তাদের জন্য দরজা খোলা”-বলছিলেন বাংলাদেশি প্রপা রহমান।by MM Telecom Pvt Ltd

No comments:
Post a Comment
আপনাকে ধন্যবাদ ।